বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
কাবা শরিফের ইমাম উদ্বোধন করবেন টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ

কাবা শরিফের ইমাম উদ্বোধন করবেন টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

টাঙ্গাইল সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে গোপালপুর থানা সদর অবস্থিত। সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে নগদা শিমলা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি অবস্থিত। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া বেগম। নির্মাণাধীন মসজিদটিতে ২০১৮ সাল থেকে পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে। শবে বরাত ও শবে কদর উপলক্ষে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের কার্যক্রমও চলে। মসজিদের বাম পাশে মাজারের মতো একটি স্থাপনা রয়েছে। সেখানে একজনের কবর দেওয়ার মতো জায়গা ফাঁকা পড়ে আছে। এখানে সমাহিত হবেন এই মসজিদের নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম।

মসজিদসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ৪৫১ ফুট উচ্চতার একটি বিশাল বড় মিনার তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৫৭তলা উঁচু ভবনের সমান এই মিনারের ৫০তলা পর্যন্ত থাকবে লিফট সুবিধা। নাম হবে রফিকুল ইসলাম টাওয়ার। নির্মাণ শেষ হলে দিল্লির কুতুব মিনারকে পেছনে ফেলে দিবে রফিকুল টাওয়ার। কুতুব মিনার ২৪০ ফুট উঁচু।মসজিদটির পশ্চিমাংশে উত্তর-দক্ষিণে বয়ে গেছে যমুনার শাখা ঝিনাই নদী। এটি মসজিদের সৌন্দর্যকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। মসজিদের উত্তর দিকে অবস্থিত অজুখানা। বিশাল বড় অজুখানায় বসে অজু করার জন্য ছোট ছোট চেয়ারের মতো ১১৬টি আসন রয়েছে। অজুখানার ছাদ ছাইরঙা ক্ষুদ্রকায় পাথরের মতো মোজাইক করা। তাতে মধ্যম গভীর পানির আঁধার। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অজুখানাটি সামান্য বাঁকা করে নির্মাণ করা হয়েছে।দ্বিতীয়তলায় প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ মণ পিতল। এখানে একসঙ্গে ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। দ্বিতল এই মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের টাইলস, যা মিশর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের দেয়ালের চারদিকে একসারি টাইলস লাগানো হয়েছে, যাতে খণ্ড খণ্ড করে পুরো পবিত্র কোরআন লিপিবদ্ধ। মিহরাবের পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হয়েছে। এখানে থাকবে জানাজার ব্যবস্থা। প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণাধীন এই মসজিদটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও এতে সহস্রাধিক বৈদ্যুতিক পাখা যুক্ত করা হবে।মসজিদের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ একই। মানে ১৪৪ ফুট করে। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির ছাদের মূল গম্বুজের উচ্চতা ৮১ ফুট। এই গম্বুজের চারপাশ ঘিরে ১৭ ফুট উচ্চতার আরও ২০০ গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। মসজিদের চার কোনায় রয়েছে ১০১ ফুট উঁচু চারটি মিনার। এছাড়া ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে।

গম্বুজ আর মিনারগুলোতে দৃষ্টিনন্দন উন্নতমানের টাইলস বসানো। ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ ভ্রমণ পিপাসু অসংখ্য মানুষ এটি দেখার জন্য ও সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন ছুটে আসেন এখানে।তবে করোনাভাইরাসের কারণে বেশ কিছুদিন মসজিদটি বন্ধ ছিল। আবার তা চালু হয়েছে এবং যথারীতি নামাজও আদায় হচ্ছে। মুখরিত হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের ভিড়ে। মসজিদটির উত্তর-পশ্চিম দিকে একটি ছয়তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে বিনামূল্যে হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকবে। এই বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠলে মসজিদ ও নদীর সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করা যায়।মসজিদের পাশেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা গাড়ি রাখার স্থান। মসজিদের সামনে রয়েছে কয়েকটি দোকান। খাবার হোটেলসহ আরও আছে শোপিস, আচার, খেলনাসহ বেশ কিছু পণ্যের দোকান। ছোটদের জন্য আছে ট্রেন, নাগরদোলা, নৌকা দোলনি ইত্যাদি খেলার ব্যবস্থা।এলাকাবাসীর প্রত্যাশা নির্মাণ শেষ হলে গিনেস রেকর্ড বুকে স্থান করে নেবে ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। এই মসজিদ ঘিরে আশপাশে তৈরি হচ্ছে ফাইভস্টার হোটেল, আবাসিক হোটেল, মার্কেট, হেলিপ্যাডসহ অত্যাধুনিক সব বিল্ডিং।এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, মসজিদের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। বিশ্বের সকল মসজিদের চেয়ে এর কারুকাজ অন্যরকম। মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হলে কাবা শরিফের ইমাম এসে নামাজের ইমামতি করে এর উদ্বোধন করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com